গর্ভবতী মায়ের আমল ও দোয়া সম্পর্কে জেনে নিন

 

প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা গর্ভবতী মায়ের আমল ও দোয়া সম্পর্কে বিশেষ আলোচনা করব। আপনার যদি গর্ভবতী মায়ের যত্ন নিতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে বিশেষ কিছু গুরুত্বপূর্ণ গর্ভবতী মায়ের আমল ও দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন। গর্ভবতী নারীদের সুস্থ কামনা করে এই আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে।
গর্ভবতী মায়ের আমল ও দোয়া
গর্ভবতী মায়েদের এই সময় নানা ধরনের বিপদ আপদ হতে পারে। এর জন্য গর্ভবতী মায়ের আমল ও দোয়া যে গর্ববস্থায় ইসলামিক শরীয়তে মা ও শিশু শরীর-স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য এবং বিপদ আপদ থেকে দূরে থাকার জন্য এই আর্টিকেলটি শুরু করা হচ্ছে। তাই চলুন দেরি না করে জেনে নিন গর্ভবতী মায়ের আমল ও দোয়া সম্পর্কে সঠিক তথ্য। আর্টিকেল টি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ গর্ভবতী মায়ের আমল ও দোয়া সম্পর্কে জেনে নিন

ভূমিকা

গর্ভবতী নারীদের ইসলামিক শরীয়তে গর্ভবতী মায়ের আমল ও দোয়া করলে তার শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে। আজকে আমরা যেসব আমলগুলো বিষয়ে আলোচনা করব জেনে নিন। গর্ভবতী মায়ের ১০ মাসের আমল, গর্ভবতী মায়ের কোন মাসে কি আমল, ইসলামে গর্ভাবস্থায় আমল, গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল, গর্ভাবস্থায় বাচ্চা সুরক্ষিত রাখার আমল, গর্ভবতী নারীর দোয়া কবুল হয় এই সকল বিষয়েই বিস্তারিত আলোচনা করব।

গর্ভবতী মায়ের ১০ মাসের আমল

গর্ভবতী নারীরা যখন গর্ভধারণ করবেন অবশ্যই আল্লাহর পাকের শুকরিয়া আদায় করতে হবে। এবং গর্ভবতী নারীদের দোয়া ও আমল করতে হবে এবং গর্ভবস্থায় বেশি বেশি সূরা ইয়াসিন পাঠ করতে হবে। গর্ভবস্থায় সবসময় বেশি বেশি আল্লাহর উপর জিকির করা উচিত। এবং হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর উপর বেশি বেশি দরুদ শরীফ পাঠ করা উচিত। গর্ভবস্থায় অবশ্যই নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করুন। এবং সকাল বিকাল কুরআন তেলাওয়াত করুন এতে নেককার সন্তান আপনার জন্য অপেক্ষা করবে।
যে সকল গর্ভবতী নারীরা ইসলামিক শরীয়তে দোয়া ও আমল পালন করবে তার কোন ভয় বা বিপদ আপদ শরীরের আশপাশে আসতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। গর্ভবতী মা এই অবস্থায় অনেক জ্বালা যন্ত্রণা সহ্য করে চলাফেরা করে। আর আল্লাহর রহমতে যদি ফেরেশতারা সবসময় গর্ভবতী মায়েদের আশেপাশে থাকে। ইনশাআল্লাহ কোনো বিপদ আসবে না। এর জন্য ইসলামিক যেসব আমল রয়েছে গর্ভবস্থায় করতে হয় সবগুলোই নিয়মিত পালন করার চেষ্টা করুন।

এইসব ফজিলত গুলো পালন করলেই নেকার সন্তানের পরিণত হবে। গর্ভবতী মায়ের ১০ মাসের আমল প্রথম মাস থেকেই বেশি বেশি সূরা আল ইমরান পাঠ করুন। এবং পেটে ব্যথা অনুভব করলে সূরা ফাতিহা পানিতে পড়ে ফু দিলে ওই পানি খেলে ব্যথা দূর হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। দ্বিতীয় মাসে বেশি বেশি সূরা ইউসুফ বেশি বেশি পাঠ করতে হবে এতে করে আপনার সন্তান নেককার হবে। এইভাবেই নিয়মিত 10 মাস সূরা পাঠ করতে পারেন। ইনশাআল্লাহ আপনার জীবনে নেককারী সন্তান পৃথিবীতে আল্লাহ পাক নিয়ে আসবেন।

গর্ভবতী মায়ের কোন মাসে কি আমল

গর্ভবতী মায়েদের পাশে সব সময় আল্লাহর পাকের রহমত থাকে। তবে এর চেয়ে বেশি রহমত ও আল্লাহর ফেরেশতা সঙ্গে নিয়ে থাকার জন্য এই অবস্থায় বেশি বেশি আমল করা উচিত। এবং দানশাদকা করা উচিত এগুলো ঠিকমতো করলে আল্লাহ পাক অত্যন্ত খুশি হন আর আল্লাহকে খুশি করতে পারলেই আপনার জীবনের কোন কিছু অভাব হবে না ইনশাআল্লাহ। আপনারা বেশি বেশি গর্ভবস্থায় দোয়া ও আমল করার চেষ্টা করুন।

যখনই সময় পাবেন আল্লাহ তাআলার ইবাদত বন্দেগি করে যাবেন। গর্ভবতী নারীদের কোরআন তেলাওয়াত করা সবচেয়ে বেশি উত্তম। গর্ভবতী মায়ের কোন মাসে কি আমল গর্ভবতী মা যে চার মাস নিয়মিত আমল গুলো করবে তা হলো-বেশি বেশি সূরা পাঠ করা এবং জিকির করা। সন্তান নেকার পাওয়ার জন্য ও জ্ঞানী সন্তান পাওয়ার জন্য সূরা লোকমান নিয়মিত পাঠ করুন। তাহলে আল্লাহ পাক ইনশাআল্লাহ আপনাকে একটি জ্ঞানী সন্তান পৃথিবীতে নিয়ে আসবে।
পরের মাস গুলোতে এবং পঞ্চম মাসের পর শরীর সুস্থ রাখার জন্য যে সকল দোয়া দরুদ গুলো করা উচিত তার পাশাপাশি সূরা ইউসুফ এবং সূরা আল ইমরান পড়া উচিত। কারণ সূরা ইউসুফ ও সূরা আল ইমরান এই দুটি সূরার অনেক ফজিলত রয়েছে তাই গর্ভবতী মায়েরা অবশ্যই এই দুইটি সূরা নিয়মিত পাঠ করবেন। এর পাশাপাশি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে।

ইসলামে গর্ভাবস্থায় আমল

আল্লাহপাক বলেন, সবসময়ই তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় কর। ইসলামে গর্ভবস্থায় আমল একটি গর্ভবতী পেটে সন্তান আশা ভাগ্যের বিষয় এর কারণে আল্লাহর উপর বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করা। একটি নারীর ধন-সম্পদ হল নেককার সন্তান নেকার সন্তানের জন্য অবশ্যই আল্লাহর উপরে আস্থা রাখা এবং প্রতিনিয়ত আল্লাহকে স্মরণ করা। আল্লাহকে যেভাবে স্মরণ করবেন বেশি বেশি জিকির আজগার গুলো নিয়মিত পাঠ করবেন। এতে করে আল্লাহর রহমত আপনার সঙ্গে সবসময় ছায়ার মতো পাশে থাকবে।

কোরআন হাদিসে উল্লেখ রয়েছে যে নারী গর্ভবস্থায় জিকির ও দান সদকা করে থাকেন তার উপর আল্লাহর রহমত ও আল্লাহপাক খুশি হয়ে গর্ভবতী মায়ের জন্য যে সকল কাজ করলে ভালো হয় ওগুলোই আল্লাহ তাআলা তার ভাগ্যে লিখে দেয়। এই সন্তানকে সুশিক্ষিত করে তুলতে পারলে এবং কুরআনের পাখি করতে পারলে দুনিয়াতেও শান্তি আখিরাতেও শান্তি মিলবে এবং আল্লাহতালা কাল কিয়ামতের দিন মা বাবার জন্য জান্নাতের আটটি দরজায় খুলে দেবেন।

গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল

স্বাভাবিকভাবে গর্ভাবস্থায় একটি সন্তান কেমন হবে এই সকল বিষয়ে মা-বাবা চিন্তা করেন। তবে এটা করা মোটেও ঠিক নয় আপনার জন্য কেমন সন্তান ভালো হবে তিনি উপর আল্লাহ ভালো জানে। তাই বেশি চিন্তা করবেন না আল্লাহ যা করেন মঙ্গলের জন্যই করেন। গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল, সাধারণত হাদিসে এরকম ফর্সা হওয়া এসব বিষয়ে বর্ণিত নেই। আল্লাহপাক যেমন সন্তান আপনাকে দান করবেন ওইটা নিয়েই আপনাকে সন্তুষ্ট থাকা উচিত।

আপনি এতটুকু করতে পারেন সন্তানের জন্য মা-বাবার উভয় দোয়া করুন। হাদিসে এবং হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন মা-বাবার দোয়া সন্তানের জন্য কখনো ফিরিয়ে দেন না। তাই সন্তান ফর্সা হওয়ার বা মেধাবী হওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে আল্লাহর কাছে চেয়ে নিতে হবে। তাই মা বাবা দুজনকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী হতে হবে। এই অবস্থায় বেশি বেশি দোয়া ও আমল করুন। দেখবেন আল্লাহর রহমতে আপনারা যেমন সন্তান চেয়েছিলেন ঐরকমই পাবেন ইনশাআল্লাহ।

গর্ভাবস্থায় বাচ্চা সুরক্ষিত রাখার আমল

পবিত্র কুরআন শরীফে আল্লাহ তা'আলা আমাদের বিপদ-আপদ এবং ভালো-মন্দ জন্য প্রত্যেকটা বিষয়ে সূরা বর্ণিত করেছেন। গর্ভাবস্থায় বাচ্চা শরিক খোলা রাখার আমল নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি নফল ইবাদত গুলো নিয়মিত করতে হবে। এবং গর্ভবতী মায়ের সুস্থ ও বাচ্চা সুস্থ রাখার জন্য অবশ্যই সূরা ইখলাস বেশি বেশি পাঠ করুন। আল্লাহর নেয়ামতকে সবসময় শুকরিয়া করুন। মানুষের সঙ্গে ভালো আচার আচরণ করুন।
বাচ্চা সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠার পর সূরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করুন এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে জিকির করার পর সূরা ইয়াসিন পড়ে ঘুমান। এর চেয়ে বেশি আমল করতে পারলে আপনার শরীরের জন্য এবং বাচ্চার সুরক্ষিত রাখার জন্য সবচেয়ে বেশি ভালো হবে। এবং রহমতের ফেরেশতারা আপনার জন্য আপনার বাচ্চার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা করবেন।

গর্ভবতী নারীর দোয়া কবুল হয়

একটি নারী ইসলামের বেশি মর্যাদা রয়েছে। আল্লাহ পাক অবশ্যই গর্ভবতী নারী দোয়া কবুল করে থাকে। তাই নেকার পুত্র সন্তান চেয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে পারেন ”রাব্বি হাবলি মিনাস সালেহীন” এর অর্থ আল্লাহ তুমি আমাকে নেককার সন্তান দান করো। গর্ভবতী মায়েদের গর্ব অবস্থায় বেশি বেশি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা আদায় করা এবং আল্লাহকে খুশি করা। গর্ভবতীর সময় নারীদের জন্য এই দশটি মাস কষ্টের হলেও বরকতময় মাস। তাই এ মাসগুলোতে বেশি বেশি দোয়া ও আমল করুন। এই সকল দোয়া আমল করলে আল্লাহ পাক অবশ্যই আপনার মনের আশা পূরণ করবেন ইনশাআল্লাহ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url