গর্ভবতী মায়ের ফল খাবার তালিকা কি কি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
প্রিয় পাঠক, আমরা জানব গর্ভবতী মায়ের ফল খাওয়ার তালিকা কি কি সম্পর্কে। আপনার
মনে যদি প্রশ্ন এসে থাকে গর্ভবতী মায়ের ফল খাওয়ার তালিকা কি কি সম্পর্কে
তাহলে এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। গর্ভবতী মায়ের ফল খাওয়ার তালিকা
সম্পর্কে এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে বিস্তারিত আলোচনা করব।
আশা করি এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে গর্ভবতী মায়ের ফল খাওয়ার তালিকা সম্পর্কে সঠিক
তথ্য পেয়ে যাবেন। তো চলুন শুরু করা যাক এবং গর্ভবতী নারীদের ফল খাওয়ার উপকারিতা
ও অপকারিতা এই সকল বিষয়ে আলোচনা করব। গর্ভবতী মায়ের এই সময় শরীরে প্রচুর
পরিমাণে পুষ্টিগুণ দরকার পড়ে। এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আশা করি আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে অনেক উপকারে আসবে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ গর্ভবতী মায়ের ফল খাবার তালিকা কি কি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
ভূমিকা
গর্ভকালীন নারীদের খাদ্য ও পুষ্টি প্রচুর পরিমাণে ভূমিকা রাখে এর সবচেয়ে বেশি
পুষ্টি জোগাতে একমাত্র ফল অন্যতম। গর্ভবতী মায়ের ফল খাওয়ার তালিকা কি কি
সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই। আজকে আমরা যেসব বিষয়ে আলোচনা করব তা হলো-২ মাসের
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা, ৩ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা, ৪ মাসের
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা, গর্ভবতী মায়ের খাদ্য ও পুষ্টি, গর্ব অবস্থায় কি
কি ফল খাওয়া যাবেনা, গর্ভবতী মায়ের কোন খাবার খাওয়া যাবেনা, এই সকল বিষয়েই
আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব।
২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
গর্ভবতী নারীদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং শিশু সুস্থ রাখতে পুষ্টিকর
খাওয়ার সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় নানা ধরনের রোগে আক্রমণ করতে পারে
তাই রোগ প্রতিরোধ করার জন্য বেশি বেশি ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেতে পারেন।
নিয়মিত ফল খেলে শরীর-স্বাস্থ্য মা ও শিশু দুইজনেরই ভালো থাকবে। এই সময় গর্ভবতী
নারীদের খাওয়ার অবহেলিত করলে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই নিয়মিত
স্বাস্থ্যকর খাবার খান।
পুষ্টিকর খাওয়ার শর্করা, সোডিয়াম এইসব খাবারগুলোতে বেশি পুষ্টি মিলে। গর্ভবতী
নারীদের পুষ্টি কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ তাই সুষম খাদ্য নিয়মিত খেতে হবে
পাশাপাশি ভিটামিন, প্রোটিন, খনিজ এবং অন্যান্য যে সকল ভিটামিন খাদ্য রয়েছে এগুলো
নিয়মিত খেলেই শরীর স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে এবং মা ও শিশু ভালো থাকবে। দুই মাসের
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা-
আরো পড়ুনঃ ৮টি খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
শাক সবজি-টাটকা ও তাজা শাকসবজি এই সময় মা ও শিশুর জন্য সবচেয়ে বেশি
ভূমিকা রাখে। যেমন সবুজ সবজি গুলো বেশি বেশি খাবার তালিকায় রাখবেন।
বিশুদ্ধ পানি-গর্ভবতী নারীদের পিপাসার এবং পানি শূন্যতার অভাব দেখা দিতে
পারে তাই নিয়মিত কিছুক্ষণ অন্তর অন্তর পানি পান করবেন। পানিতে রয়েছে হাইড্রেটেড
এর জন্য নিয়মিত পানি পান করুন।
প্রোটিন যুক্ত-গর্ভবতী নারীদের প্রোটিনের প্রচুর পরিমাণে চাহিদা রয়েছে
তাই, মাছ মাংস ডিম মুরগি, কবুতর, ছোট মাছ, এগুলো প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে
এইসব খাদ্যগুলো নিয়মিত খাওয়ার তালিকায় রাখুন।
দুর্গন্ধজাত পণ্য-গর্ভবতী নারীদের জন্য এই সময় দুর্গন্ধ জাত এবং
ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি এইসব স্বাস্থ্যকর খাবার তালিকায় রাখুন। এবং গর্ভবস্থায়
দুধ, ডিম. এবং টক দই খেতে পারেন।
৩ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
গর্ভবতী নারীদের গর্ভবস্থায় সব ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন পড়ে। ফলিক এসিড, আয়রন,
প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, আঁশ জাতীয় খাবার এই সকল ভিটামিন
গুলোই গর্ভবতী নারীদের মা ও শিশু সুস্থ ও ভালো রাখতে প্রয়োজন পড়ে। এবং দুজনেরই
শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখে। তিন মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা-
প্রোটিন সমূহ-গর্ভবতী নারীদের এই সময় ৮০ থেকে ১০০ গ্রাম প্রোটিন শরীরে
দরকার হয়। এর ফলে খাদ্য তালিকায় মাছ, মুরগি, ডাল, ডিম ইত্যাদি এসব খাদ্য
তালিকায় রাখা উচিত।
আরো পড়ুনঃ টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আশঁ জাতীয়-গর্ভাবস্থায় আশঁ যুক্ত খাবার শরীরের জন্য প্রচুর পরিমাণে
ভিটামিন জগতে সাহায্য করে। যেসব খাবারগুলোতে আঁশযুক্ত খাবার রয়েছে যেমন-মটরশুটি,
ছোলা, ভুট্টা, শাকসবজি ইত্যাদি।
ক্যালসিয়াম-গর্ভাবস্থায় শিশুদের হাড় ও শরীর দূরত্ব গঠনে ক্যালসিয়াম
সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই গর্ভবতী নারীদের এই সময় ক্যালসিয়াম যুক্ত খাদ্য
খাওয়া উচিত। যেমন শাকসবজি, দুধ, টক দই, ছোট মাছ, পালং শাক, ডিম, ঢেঁড়স এবং পনির
জাতীয় খাদ্য ইত্যাদি।
৪ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
গর্ভবস্থায় যতদিন বাড়বে তত পুষ্টিকর খাদ্য ওপর চাহিদা প্রভাব ফেলবে। তাই
পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন জাতীয় অথবা ভিটামিনসমূহ খাদ্য খান। এবং প্রচুর পরিমাণে
পানি পান করুন গর্ভবতী নারীদের শরীরের জন্য পানি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে।
গর্ভবস্থায় পানির পিপাসা বেশি থাকতে পারে, তাই বিশুদ্ধ পানির পাশাপাশি ফলের জুস
খেতে পারেন, টাটকা ফলের জুস খেলে শরীর স্বাস্থ্য এবং মন মানসিকতা স্বাভাবিক
থাকবে। ৪ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা-
এখন আস্তে আস্তে পেট বাড়বে তাই প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যুক্ত এবং আয়রন সুমো
খাদ্য খাওয়ার চেষ্টা করুন। আয়ন যুক্ত খাবার যেগুলো ডিম, ডাল, ছোলা, দুধের ছানা,
কাচা বাদাম ইত্যাদি। প্রোটিনযুক্ত খাবার-দুধ, টক দই, পনির, সবুজ শাকসবজি, ছোট মাছ
ইত্যাদি। গর্ভবতী নারীদের ভিটামিন সি খাওয়ার খাওয়া উচিত যেমন-নিয়মিত দিনে
দুইবার লেবুর শরবত, কমলালেবুর জুস, মুখের রুচি জন্য আমলকি, জাম্বুরা এই সকল
ফলগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পেয়ে যাবেন।
গর্ভবতী মায়ের খাদ্য ও পুষ্টি
গর্ভবতী নারীদের গর্ভবস্থায় ঠিকমতো শরীরের যত্ন না নিলে নানা ধরনের সমস্যা দেখা
দিতে পারে। গর্ভবতী মায়ের খাদ্য পুষ্টি আমিষ যুক্ত খাদ্য খাওয়া উচিত। কারণ এই
অবস্থায় শরীর-স্বাস্থ্য স্বাভাবিক চেয়ে বেশি আমিষ খাদ্য দরকার হয়। আমিষ যুক্ত
খাওয়ার মাছ, মাংস, ডাল, সবুজ শাকসবজি, কাঁচা বাদাম, দুধ, দই, মটরশুঁটি এবং সিমের
বীজ ইত্যাদি। গর্ভবস্থায় সবচেয়ে বেশি টাটকা শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
আরো পড়ুনঃ লেবু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
ক্যালসিয়াম এবং ফলক এসিড খাদ্য যেগুলো-বাঁধাকপি, পালং শাক, গম, বাদাম, মাছ, ডিম,
দুধ, কলিজা এবং ফলের রস এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এর ফলে নবজাতকের হাড়
ও দাঁত স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। অতএব গর্ভবতী নারীদের নিয়মিত সুষম
খাদ্য এবং খাদ্য পাশাপাশি শরীর স্বাস্থ্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা দিকে নজর রাখতে
হবে। পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শরীরের যত্ন নিতে হবে।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না
গর্ভবতী নারীদের এই সময় সতর্কতা অবলম্বন করে চলা উচিত। এবং কিছু খাদ্য রয়েছে যা
ত্যাগ করা উচিত। গর্ভবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবেনা, বিশেষজ্ঞরা বলছেন গর্ভকালীন
পেঁপে না খাওয়ার কথা। কারণ পেপে রয়েছে প্যাপেইন উপাদান। এর জন্য গর্ভাবস্থায়
পেঁপে খেলে গর্ভপাতের সমস্যা বাড়তে পারে। আঙ্গুর গর্ভবতী নারীদের জন্য ক্ষতিকর
হতে পারে। গর্ভবস্তায় আনারস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। আনারসে রয়েছে ব্রোমলিন এর
ফলে নারীদের জরায়ুকে নরম এবং শীতল করে দেয়।
গর্ভবতী মায়ের কোন খাবার খাওয়া যাবে না
গর্ভবতী নারীদের এই সময় প্রচুর পরিমাণে খাদ্যের প্রয়োজন হয়। তবে যেকোনো খাদ্য
খাওয়া উচিত নয় এবং খেলেও ডক্টরের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া উচিত। গর্ভবতী মায়ের
কোন খাবার খাওয়া যাবে না, যেমন-কফি. কোলড্রিংস এবং অস্বাস্থ্যকর পানি পান থেকে
বিরত থাকুন এগুলো চিকিৎসকরা গর্ভবতী মহিলাদের সেবন করা থেকে দূরে থাকতে বলেছে।
অনেকে রয়েছে বলে থাকে হাফ বয়েল ডিম শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর তবে এটি গর্ভবতী
নারীদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় অনেকে রয়েছে টক খেতে ভালোবাসে। তবে তেতুল থেকে বিরত থাকুন কারণ
তেতুল একটি মারাত্মক এবং ক্ষতিকারক ফল। তেতুল অতিরিক্ত খেলে গর্ভপাতের আশঙ্কা
বেশি থাকে। এবং সামুদ্রিক মাছ এড়িয়ে চলুন সামুদ্রিক মাছে রয়েছে পারদ উপাদান এর
ফলে নবজাতকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। গর্ভাবস্থায় মসলাযুক্ত খাওয়ার কম খান।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আমি আপনাদের গর্ভবতী মায়ের ফল খাওয়ার তালিকা সম্পর্কে আপনাদের
বোঝানোর চেষ্টা করেছি আশা করছি আপনাদেরকে ঠিকমতো গর্ভবতী নারীদের পরিচর্যার
বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে পেরেছি। উপরের তালিকাতে সব ধরনের বিষয় নিয়েই এই
আর্টিকেলটি প্রস্তুত করা হয়েছে। গর্ভবতী মায়েদের জন্য ভালো মন্দ সবকিছুই এই
পোস্টটির মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়েছে। এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url