ডায়রিয়া কি কারণে হয় এবং ডায়রিয়া হলে কি করণীয়

 

প্রিয় ভিউয়ার্স, আজকে আমি আপনাদের ডায়রিয়া কি কারণে হয় এবং ডায়রিয়া হলে কি করণীয় আলোচনা করব। আপনি যদি ডায়রিয়া সংক্রান্ত বিষয় জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি শুধু মাত্র আপনার জন্য। ডায়রিয়া তেমন জটিল রোগ নয় আবার হেঁয়ালি করাও যাবে না। তাই আজকে আমরা ডায়রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
ডায়রিয়া কি কারণে হয় এবং ডায়রিয়া হলে কি করণীয়
ডায়রিয়া মূলত একটি পানিবাহিত রোগ দূষিত পানি পান করলে এই রোগ দেখা দেয় এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে ডায়রিয়া রোগ হতে পারে। তাই আমাদের ডায়রিয়া নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আশা করছি এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়বেন। তাই চলুন শুরু করা যাক ডায়রিয়া কি কারণে হয় এবং ডায়রিয়া হলে কি করণীয়।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ডায়রিয়া কি কারণে হয় এবং ডায়রিয়া হলে কি করণীয়

ভূমিকা

ডায়রিয়া রোগ হলে মানব দেহের স্বাস্থ্যের অনেক সমস্যা দেখা দেয় এবং দুর্বলতা সৃষ্টি করে। ডায়রিয়া কি কারণে হয় এবং ডায়রিয়া হলে কি করণীয়, ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ, ডায়রিয়া হলে কি খাওয়া উচিত, ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত, বড়দের ডায়রিয়া হলে করণীয় কি, কি খেলে পাতলা পায়খানা বন্ধ হয়, ডায়রিয়া হলে কি কি খাওয়া যাবে না, ডায়রিয়া প্রতিরোধ ও প্রতিকার এই সকল বিষয়ে আলোচনা করব।

ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ

ডায়রিয়ার লক্ষণ পানির মত মল। এবং কখনো কখনো শুধু তরল মল নামে এবং কিছুক্ষণ পরপর পায়খানা অনুভব হয়। পায়খানা অনুভব হলেই মলত্যাগের জন্য বাথরুমে যেতে হয় এগুলাই হচ্ছে ডায়রিয়ার রোগের লক্ষণ সাধারণ মলত্যাগের মতো ডায়রিয়া রোগের মলত্যাগ নয়। ডায়রিয়া হলে মল থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়, ঘন ঘন মলত্যাগ, পেটের ব্যথা অনুভব করা এগুলোই মূলত ডায়রিয়ার লক্ষণ।

ডায়রিয়া হলে কি খাওয়া উচিত

ডায়রিয়া হলে শরীরের যাবতীয় পানি বেরিয়ে আসতে থাকে। তাইডায়রিয়া হলে তরল জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত যেমন-ডাবের পানি বেশি বেশি খাওয়া উচিত এবং পাশাপাশি ওর স্যালাইন খান। এবং লাচ্ছি অথবা হালকা লিকার চা খেতে পারেন। ডায়রিয়া হলে কাঁচা কলা ভর্তা শুকনো শুকনো ভাত খেতে পারেন।এবং তেল যুক্ত খাওয়ার থেকে বিরত থাকুন। ডায়রিয়া হলে পেটের ভিতরে এক ধরনের দূষণ ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়।

ডায়রিয়া হবার ফলে শরীর প্রচুর পরিমাণে দুর্বল হয়ে পড়ে। কারণ দেহের পানি প্রচুর পরিমাণে বেরিয়ে যাই এবং পানি শূন্যতা দেখা দেয় এর জন্যই তরল জাতীয় খাবার বেশি খান। ডায়রিয়া ভালো হতে এক থেকে দুই দিন সময় লাগে।

ডায়রিয়া হলে কি খাবেন?আসুন কয়েকটি বিষয় জানি-
  • ডায়রিয়া হলে, বেশি পরিমাণ তরল জাতীয় খাবার খান এবং রাসালো খাবার খান।
  • ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে পানির সঙ্গে খাবার স্যালাইন ব্যবহার করুন।
  • টাটকা কচি ডাবের পানি খান ডাবের পানি ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকরী।
  • বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ডায়রিয়া হলে পটাশিয়াম যুক্ত খাবার খান, কাঁচা কলা অথবা ফলের রস করে খান।
শরীর বেশি পরিমাণ দুর্বল হয়ে গেলে এবং পায়খানার সঙ্গে রক্তপাত হলে, বা অতিরিক্ত পানি পিপাসা লাগলে আশেপাশে চিকিৎসকের পরামর্শ এবং চিকিৎসা গ্রহণ করুন।

ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত

আমরা অনেকেই ডায়রিয়া হলে বা পাতলা পায়খানা হলে চিন্তিত হয়ে যায়। এবং পায়খানা জন্য আশেপাশে ফার্মেসিতে গিয়ে যেকোনো ওষুধ খেতে ব্যস্ত থাকি। আসলে ঠিকমতো চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে এগুলো করা মোটেও ঠিক নয় যেকোনো অসুস্থতার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাবেন। অনেক সময় দেখা যায় ডায়রিয়া হলে ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হয় না এমনি নিজ থেকেই ভালো হয়ে যায়।

তবে বেশি পরিমাণ সমস্যা দেখা দিলে খাবার স্যালাইন খেতে পারেন। ডায়রিয়া হলে আমরা অনেক সময় কিছু কিছু হাতুড়ে ডাক্তারের কথা শুনে নানা ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ খেয়ে নেন। তবে মনে রাখবেন বেশি প্রয়োজন ছাড়া এইসব ঔষধ খাবেন না। ডায়রিয়া হলেই ঘরোয়া ঔষধ খান যেমন-ওরস্যালাইন ডাবের পানি এইসব তরল যুক্ত খাবার বেশি বেশি খান। বাইরের কোন ঔষধ অতি প্রয়োজন ছাড়া খাবেন না।

বড়দের ডায়রিয়া হলে করণীয় কি

ডায়রিয়া পানিবাহিত রোগ এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে এ রোগ সৃষ্টি হয় এইসব জীবাণু থেকে ডায়রিয়া ছড়ায়। বিশেষজ্ঞরা ডায়রিয়া এরাতে বিশুদ্ধ পানি পান করতে বলেছেন এবং জীবাণুমুক্ত খাবার খেতে বলেছেন। তবে গরম গরম খাবারে জীবাণু মিশতে পারে না ঠান্ডা খাবার গুলিতে জীবাণু স্বল্প সময়ে মিশে যায় সেখান থেকেই খাবার অসাস্থ্যকর খাবার হয়ে ওঠে। এবং ভাইরাস থেকে ডায়রিয়া রোগ শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।

বড়দের ভেতরে অনেকেই বাইরের খাবার পছন্দ করে বাচ্চারা করে এবং রাস্তার পাশের ফুটপাতের খাবার গুলিতে অস্বাস্থ্যকর খাবার বেশি দেখা যায়। আর মূলত বাইরের খাবার খেলেই শরীরের অসুস্থতা এবং পায়খানা হয়। ডায়রিয়া এরাতে আপনার হাত সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। এবং সাবান দিয়ে ভালোমতো হাত ধুয়ে খাবার খাবেন। কারণ হাতের তালুতে নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া লেগে থাকে।

কি খেলে পাতলা পায়খানা বন্ধ হয়

পাতলা পায়খানা হয় মূলত ব্যাকটেরিয়া সংক্রমনের কারণে এবং নানা ধরনের দূষিত খাবার থেকে পাতলা পায়খানা হয়। এবং বেশি পরিমাণ তেলযুক্ত খাবার খেলে পাতলা পায়খানা হয়। দীর্ঘদিন পর পায়খানা করলে পাতলা পায়খানা হতে পারে। ভাইরাস জনিত রোগ থেকে তরল মল বের হয়। পাতলা পায়খানা ভালো হতে বেশিদিন লাগে না এক দুই দিনের ভিতরেই সেরে যায়। তাই প্রয়োজন ছাড়া ঔষধ খাবেন না।

যতবার টয়লেট ব্যবহার করবেন ততবার একটি করে খাবার স্যালাইন খেয়ে নেবেন। খাবার স্যালাইনটি আধার লিটার বিশুদ্ধ পানি অথবা পানি বেশি ও দিতে পারেন, কমও দিতে পারেন। ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হলে রোগী পানির পিপাসা বেড়ে যায় তাই চেষ্টা করবেন ডাব খাওয়ার ডাবের পানি অনেক গুরুত্বপূর্ণ পাতলা পায়খানার ক্ষেত্রে।

ডায়রিয়া হলে কি কি খাওয়া যাবে না

ডায়রিয়া হলে তেল যুক্ত খাওয়ার এবং দুধ ও দুর্গন্ধ এমন ধরনের খাবার থেকে বিরত থাকুন। মিষ্টি জাতীয় খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক ডায়রিয়া হলে শরীর স্বাস্থ্য আরো খারাপের দিকে নিয়ে যেতে পারে এটা কোন সন্দেহ নেই। তাই মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন মিষ্টি জাতীয় খাবার থেকে পাতলা পায়খানার চাপ সৃষ্টি বেশি পরিমাণ হয়ে থাকে।

এবং নানা ধরনের ফল আছে যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকে সেসব ফল থেকে বিরত থাকুন। ডায়রিয়া রোগ হলে মদ্যপান থেকে দূরে থাকুন এতে হজম সমস্যা বৃদ্ধি করে এবং পেটের সমস্যা জন্য মদ্যপান থেকে দূরে থাকুন। তেল যুক্ত অথবা ঝাল খাবার খেলে পেটে গ্যাস সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে তাই ঝাল বা তেল যুক্ত খাবার থেকে বিরত থাকুন।

ডায়রিয়া প্রতিরোধ ও প্রতিকার

ডায়রিয়া রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকার করার জন্য নিজের শরীর অথবা হাত সম্পূর্ণ পরিষ্কার রাখুন। পায়খানা করার পর ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন। সাবানের পরিবর্তে হ্যান্ড ওয়াস ব্যবহার করুন একই সাবান ব্যবহার না করাই ভালো। বাইরের খাবার কম খান যদি পারেন একদমই না খাওয়ার চেষ্টা করুন। সবসময়ই বিশুদ্ধ পানি পান করুন খাওয়ার আগে অথবা পরে ভালোমতো হাত ধুয়ে নিন এসব কিছু মেনে চললেই রোগ প্রতিরোধ প্রতিকার দূর হবে।










এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url