পাট উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান-২০২৩ জেনে নিন
প্রিয় পাঠক, আজকে আমি পাট উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে বিশেষ আলোচনা
করব। এবং পাট শিল্প চাহিদা বেশি কোন দেশে এই সকল বিষয়ে আর্টিকেলটি তৈরি করা
হচ্ছে। আপনি যদি পাট রপ্তানি বিষয়ে তথ্য জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে
পাট উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
বাংলাদেশ প্রচুর পরিমাণে পাট উৎপাদন করে থাকেন কৃষকরা এবং বাংলাদেশ পাটের বিভিন্ন
ধরনের জিনিস তৈরি করা হয়। পাট উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান কত এবং কেমন চাহিদা
রয়েছে এই সকল বিষয়েই এই পোস্টটি লেখা হয়েছে। পাট উৎপাদনের বাংলাদেশের অবস্থান
কেমন এই সকল বিষয়ে জানতে হলে এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
কনটেন্ট সূচিপত্রঃ পাট উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান-২০২৩ জেনে নিন
ভূমিকা
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাট উৎপাদন হয়ে থাকে। যে সব অঞ্চল গুলোতে পাট চাষ করা
হয় ময়মনসিংহ, রংপুর, দিনাজপুর, টাংগাইল, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া ইত্যাদি। এ
সকল অঞ্চলে পাট চাষের প্রচুর পরিমাণে চাহিদা রয়েছে। এর জন্য পাট উৎপাদনে
বাংলাদেশের অবস্থান কেমন এই সকল বিষয়েই আপনাদের জানাবো। এবং কি কি বিষয়ে এই
আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে জেনে নিন। পার্ট রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান ২০২৩, পাট
রপ্তানিতে শীর্ষ দেশ ২০২৩, পাট উৎপাদনে বাংলাদেশের শীর্ষ জেলা, সবচেয়ে বেশি পাট
রপ্তানি করে কোন দেশ, ভারতে পাট শিল্পের গুরুত্ব, এই সকল বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা
করব।
পাট রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান ২০২৩
বাংলাদেশে পাট সোনালী আঁশ নামেই পরিচিত। এবং বাংলাদেশে এই সোনালী আঁশ ইতিহাসের
ঐতিহ্যের জন্য একটি প্রধান স্থান বললেই চলে। বাংলাদেশের পাট বিভিন্ন দেশে রপ্তানি
করে থাকে এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য বাংলাদেশের অর্থনীতি চাকা ঘুরছে।
সবচেয়ে উন্নত মান এবং সোনালী রঙের পাট বাংলাদেশে উৎপাদন হয়। এর ফলে বাংলাদেশের
পাট সবচেয়ে বেশি রপ্তানি করা হয়।
গত ২০২১-২২ বেল কাঁচা পাট অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ৭ লাখ ২১ হাজার হেক্টর জমিতে
এবং এর জন্য বাংলাদেশের পাট সর্বোচ্চ এবং বিশ্ব জুড়ে বাংলাদেশ পাট চাষে শীর্ষ।
পাটর রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান এখন সবচেয়ে বেশি এবং পাট রপ্তানিতে
বাংলাদেশের অবস্থান রয়েছে ৭২ শতাংশ।
বাণিজ্যি মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে পাট উৎপাদনের চাহিদা বেশি হওয়ায় বিভিন্ন দেশে
পাট রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এবং বাংলাদেশে পাট উৎপাদন জন্য
হাজারো স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাট উন্নত পর্যায়
নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন। ২০২৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা পাট জাতের নামকরণ ঘোষণা দিয়েছেন বর্ষপণ্য।
আরো পড়ুনঃ আধুনিক কারণের স্বল্পতা
বর্তমানে বাংলাদেশে পাট উৎপাদন এবং পাট পণ্যের ব্যবহার প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি
হচ্ছে এমন কথা জানান মন্ত্রী টিপু মুন্সি। বাংলাদেশের সরকার পাট উৎপাদনে সব ধরনের
সাহায্য করবেন বলে জানা গিয়েছে। বিশ্বে দুইটি দেশে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে পাট
উৎপাদন হয়। ভারত বাংলাদেশ এবং পাট চাষে এগিয়ে ভারত ভারতের পরপর এই রয়েছে
বাংলাদেশ। কিন্তু গত কয়েক বছরের ভেতর ভারতের পাটের উৎপাদন কমে গেছে এবং এটি কমে
দাঁড়িয়েছে ৩৭ শতাংশ।
বর্তমানে পাট উৎপাদনে বাংলাদেশ এর অবস্থান ২০২২ সালের ভেতরে বাংলাদেশ এখন পাট
উৎপাদনে সর্বোচ্চ এগিয়ে এবং ভারতকে পিছে ফেলে দিয়ে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের
শ্রেষ্ঠ পর্যায়ে দাঁড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশে পাট উৎপাদনের প্রায় ৬১ শতাংশ এগিয়ে
বাংলাদেশ।
পাট রপ্তানিতে শীর্ষ দেশ ২০২৩
বিশ্বে পাট উৎপাদনে দুইটি দেশ প্রতিযোগিতা করতেন একটি ভারত দ্বিতীয়ত বাংলাদেশ।
গত চার থেকে পাঁচ বছর আগে পাট উৎপাদনে ভারত এগিয়ে ছিলেন। পাট রপ্তানিতে শীর্ষ
দেশ ২০২৩ সালে ভারতের চেয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম অর্জন করেছেন। বাংলাদেশে
বিশ্বে সর্বোচ্চ ৩৩ শতাংশ পাট উৎপাদন করে থাকেন। তবে উৎপাদনের চেয়ে বাংলাদেশ
রপ্তানি করে বেশি এবং ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরোপ সহ নানার দেশে বাংলাদেশের সোনালী
আঁশ নামে পরিচিত পাট রপ্তানি করে।
বাংলাদেশ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতকে কখনোই কোন পণ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে পারেনি
কিন্তু গত ৩-৪ বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশ পাট উৎপাদনে বিশ্বে সর্বোচ্চ এগিয়ে
বাংলাদেশ। এবং আস্তে আস্তে ভারত পিছিয়ে পড়ছে। ভারতে এখন পাট চাষের পরিমাণ খুবই
কম, এর ফলে বাংলাদেশ সবচেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে পাট উৎপাদনে। বাংলাদেশে পাট পণ্য এবং
পাট উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
আরো পড়ুনঃ পাট কি কাজে ব্যবহৃত হয়
পাঠ মন্ত্রী বলেন পাটের উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য সরকার পাট বীজ সংকট দূর করার
জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এবং তিনি আরো বলেন বীজের সংকট খুব তাড়াতাড়ি সমাধান হয়ে
যাবে। এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাট চাষীদের জন্য নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা
করে দেওয়ার জন্য পাঠ মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর কে জানান। আর এর জন্যই কৃষকদের সুযোগ
সুবিধা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং পাশাপাশি তাদের পাট চাষে আধুনিক প্রশিক্ষণ
দেওয়া হচ্ছে।
পাট উৎপাদনে বাংলাদেশের শীর্ষ জেলা
বর্তমানে বাংলাদেশে পাট উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবং বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পাট
উৎপাদন এবং রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাট চাষ করা
হচ্ছে। এর কারণেই বাংলাদেশের জন্য পাট নতুন ভাবে স্বপ্ন দেখাচ্ছে। পাট উৎপাদনে
বাংলাদেশের শীর্ষ জেলা বর্তমানে ৫টি জেলা সবচেয়ে বেশি পাট উৎপাদনের শীর্ষে
রয়েছে।
- ফরিদপুর
- রংপুর
- ময়মনসিংহ
- নাটোর
- রাজবাড়ী
এ পাঁচটি অঞ্চলে পাট চাষ করা হচ্ছে এবং ২০২১-২২ সালের এসব অঞ্চলগুলোতে পাট উৎপাদন
সবচেয়ে বেশি হচ্ছে এবং আরো রয়েছে ফরিদপুর,কুষ্টিয়া,পাবনা এই তিনটি অঞ্চলেও
ভালো পাট চাষ করা হয়। ২০১৮ সালে বাংলাদেশের যেসব অঞ্চলগুলোতে সবচেয়ে বেশি পাট
উৎপাদন করা হতো সেইগুলোই হচ্ছে ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা। এবং এই তিনটি অঞ্চলে
২০১৯ সালে ফার্স্ট সেকেন্ড থার্ড পরিচিত লাভ করে।
আরো পড়ুনঃ পাট কোন মাটিতে ভালো হয়
প্রথমঃ ফরিদপুর জেলা।
দ্বিতীয়ঃ কুষ্টিয়া জেলা।
তৃতীয়ঃ পাবনা জেলা।
সবচেয়ে বেশি পাট রপ্তানি করে কোন দেশ
বিশ্বে দুইটি দেশ সবচেয়ে বেশি পাট উৎপাদন করে থাকে এবং উৎপাদনের পাশাপাশি
রপ্তানি করে থাকে। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পাট রপ্তানি করতেন ভারত। ২০১৫ সালের পর
থেকে ভারতে পাট উৎপাদন ও রপ্তানি আস্তে আস্তে কমে যায়। এবং এর পরেই বাংলাদেশের
পাটের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। গত ২০১৯ সাল থেকে বাংলাদেশ পাট উৎপাদন এবং পাট রপ্তানি
তে ভারতকে টপকে টপ লেভেলে চলে আসেন।
বর্তমানে বাংলাদেশে পাট চাষ বিপুল পরিমাণে হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি পার্ট রপ্তানি করে
কোন দেশ? আগে সবচেয়ে বেশি পাঠ রপ্তানি করতেন ভারত এবং কালের পরিবর্তে আস্তে
আস্তে ভারতের পাট উৎপাদন কমে যায় এর ফলে ভারত পাট রপ্তানিতে পিছিয়ে পড়ে এবং
বাংলাদেশ পাট রপ্তানির জন্য এগিয়ে যায়। এখন বর্তমানে সবচেয়ে বাংলাদেশে পাট
উৎপাদন ও পাট রপ্তানি করছে। বাংলাদেশ ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে পাট রপ্তানি করে থাকে।
২০২১-২২ সালে বাংলাদেশ পাট রপ্তানি করে ১১৩ কোটি ৭৪ লাখ ডলার আয় করেছেন।
বর্তমানে ২০২৩ সালে ১২৭ কোটি ওপরে মার্কিন ডলার এবং বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেন। এতে
অর্থনৈতিক ভাবে বাংলাদেশ লাভবান হচ্ছেন।
ভারতে পাট শিল্পের গুরুত্ব
ভারতে ২০১০ সালে পাট জাত দ্রব্য প্রধান পাট রপ্তানি কারী পণ্য ছিল। এবং পার্ট
রপ্তানিতে ভারত সর্বোচ্চ উপরে ছিলেন। ভারতে সবচেয়ে বেশি পাট উৎপাদন এবং পাট
রপ্তানি করতেন। এর জন্য ভারতকে বলা হতো পাট শিল্পের দেশ। ভারতে পাট শিল্পের জন্য
কর্মস্থান সবচেয়ে বেশি রয়েছে। পাটের ভালো একটি মান ধরে রাখার জন্য ভারত বিভিন্ন
ধরনের জিনিস তৈরি করতে পাট দিয়ে।
আরো পড়ুনঃ পাটের তৈরি জিনিস কোথায় পাওয়া যায়
পশ্চিমবঙ্গে পাট শিল্পের অবস্থান সবচেয়ে বেশি এবং পশ্চিমবঙ্গের অঞ্চলগুলোতে
বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে শিল্প-কর্মজিবি মানুষ বসবাস করতেন। ভারতে পাট শিল্পের গুরুত্ব
এখনো রয়েছে তবে বর্তমানে পাট শিল্পের জন্য ভারতে বিশেষ অবদান রয়েছে। বর্তমানে
এখন ভারতে পাট শিল্প বিভিন্ন সমস্যার মুখে রয়েছে এবং পাট শিল্প কর্মজীবীরা বেকার
গ্রস্ত হচ্ছেন। ভারতে 40 থেকে 50 লাখ কৃষি কাজে জন্য নিয়োজিত রয়েছে।
এবং শ্রমিকের প্রায় 2.5 লাখ পরিবার সংযুক্ত আছে। এখন বর্তমানে ভারতে আধুনিক
প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং বৈজ্ঞানিক ভাবে পাট শিল্পকে কাজে লাগিয়ে পাট শিল্প
কিছুটা পরিবর্তন হতে চলেছে। ভারতে কাঁচামালের সমস্যার জন্য পাটের প্রধান উপাদান
প্রতিষ্ঠানগুলো বা কেন্দ্রগুলো বাংলাদেশের হয়ে গেছে এর জন্য ভারতের পাট শিল্প
কাঁচা পাটের বিশেষভাবে সংকট দেখা দেয়।
আমাদের শেষ কথা-আধুনিক কারণের স্বল্পতা
বিভিন্ন সমস্যার কারণে ভারত পাট উৎপাদনে পিছিয়ে পড়ে এবং পাট শিল্পে ফাটল ধরে।
বর্তমানে বিভিন্ন দেশের তুলনায় ভারতের শিল্প কলকারখানার যন্ত্রপাতিগুলো পুরানো
হয়ে যায় এবং ক্ষয়প্রাপ্ত। এখন বর্তমানে যেসব দেশগুলো পাট শিল্প ব্যবহৃত যন্ত্র
গুলো স্বাভাবিক রয়েছে। বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, জাপান, ব্রাজিল এসব দেশগুলোতে
পাট জাত দ্রব্য শিল্প চালু রয়েছে। এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে পাট উৎপাদনে
বাংলাদেশের অবস্থান আলোচনা করা হয়েছে। ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করুন এবং শেষ
পর্যন্ত এই পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url