ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

শীতকালে শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে যেসব খাবার গুলো খাওয়া উচিতপ্রিয় পাঠক, আপনি কি ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে সঠিক জায়গাতেই এসে গেছেন। কারণ এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিশেষভাবে আলোচনা করা হবে। অনেকে রয়েছে ডিম খায় কিন্তু ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে কিছুই জানে না। এর জন্যই মূলত আর্টিকেলটি লিখতে বসেছি।
ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
অনেকের অনেক ধরনের ধারণা এই ডিমে। এর জন্যই ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই চলুন দেরি না করে জেনে নিন কিভাবে আর কখন ডিম খেলে বিশেষ উপকারিতা মিলে। আপনি যদি ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে চান তাহলে অবাক হয়ে যাবেন। তাই ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে হলে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচীপত্রঃ ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

ভূমিকা-ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

ডিমে রয়েছে নানা ধরনের পুষ্টিগুণ। যা সকলেরই পরিচিত, কিন্তু ঠিকমতো কেউই বলতে পারবেনা একটি ডিমে কতটা প্রোটিন ও ভিটামিন রয়েছে। তাই এগুলো জানতে হলে অবশ্যই ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলে অবশ্যই আপনি সবকিছুই বিস্তারিত জানতে পারবেন।

সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা

বিশেষ করে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের জন্য ডিম শরীরের জন্য বেশি উপকারিতা রয়েছে। ডিম বিভিন্নভাবেই খাওয়া সম্ভব কিন্তু সবচেয়ে ভালো হয় কেউ যদি সিদ্ধ ডিম নিয়মিত খায়। কারণ সিদ্ধ ডিম খেলে এতে বেশি পুষ্টিগুণ পাওয়া সম্ভব। তবে একটি কথা মনে রাখতে হবে সিদ্ধ ডিমের ক্যালরি পরিমান কম রয়েছে। এর জন্য দ্রুত ওজন কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

সিদ্ধ ডিম নিয়মিত খেলে এতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ, প্রোটিন এবং ভিটামিন সহ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়। চিকিৎসকরা সবসময়ই পরামর্শ দেয় সিদ্ধ ডিম খাওয়ার জন্য, কারণ অমলেট এবং পোচের তুলনায় সিদ্ধ ডিম বেশি কার্যকারী উপাদান রয়েছে। বিশেষ করে সিদ্ধ ডিম নিয়মিত খেলে ওজন কমানোর ভালো একটি সম্ভাবনা থাকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়েটের জন্য ডিম খাওয়া যেতে পারে, এতে দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে। হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি মজবুত করে। ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে, দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে। এরকম নানা ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায় সিদ্ধ ডিমে। নিয়মিত সিদ্ধ ডিম খেলে দাঁত ও মুখের ত্বকের সমস্যা খুব সহজেই দূর করতে সাহায্য করে।

রাতে ডিম খাওয়ার উপকারিতা

ডিম যখন ইচ্ছা খাওয়া যেতে পারে এতে কোন ধরনের সন্দেহ নেই। তবে নিয়ম করে কেউ যদি সকাল অথবা রাতে ডিম খেতে পারে তাহলে আলাদাই এক প্রকার উপকারিতা পাওয়া সম্ভব। অনেকেই কাজের ব্যস্ততার জন্য হয়তো সকালে ডিম খেতে পারে না, তাই সে রাতে অথবা সন্ধ্যার পর হালকা নাস্তার সঙ্গে একটি সিদ্ধ ডিম খেতে পারে অথবা দুইটি খেলেও সমস্যা নেই।

ডিম আমাদের নানা ধরনের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে। রাতে যদি কেউ ডিম খাওয়ার উপকারিতা খুঁজে তাহলে অবশ্যই উপকারিতা রয়েছে। কারণ ডিমে নানা ধরনের পুষ্টিগুণ এবং প্রোটিনে ভরপুর রয়েছে। তাই নিঃসন্দেহে ডিম মানব দেহের জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে। রাতে যদি কেউ খায় তাহলে তার কি কি উপকারিতা মিলবে জেনে নিন-

ভালো ঘুম-রাতে ঘুমানোর আগে সিদ্ধ ডিম খেলে আরামদায়ক ঘুম হয়।

চিন্তামুক্ত করে-মানসিক চাপ দূর করতে ঘুমানোর আগে সিদ্ধ ডিম খেয়ে নিন। কারণ ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ট্রিপটোফেন এর জন্য মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

পাকস্থলী সুস্থ রাখতে-পাকস্থলী পরিষ্কার রাখতে রাতে ডিম খাওয়া দুই ভাবে কাজ করে থাকে। যেমন-পাকিস্তানি পরিষ্কার সহ ওজন কমাতে সাহায্য করে।

কোলেস্টেরল-কেউ যদি নিয়মিত রাতে ডিম খায় তাহলে শরীরে ভালো কোলেস্টেরল জমা হয়। এর ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলো বৃদ্ধি করে, এবং হাড় মজবুত করতে সক্ষম হয়।

সকালে সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা

একটি ডিমে রয়েছে নানা ধরনের উপকারিতা। বিশেষ করে একটি ডিমে ক্যালরির চাহিদা রয়েছে ১৪৩ এনার্জি। এছাড়াও কার্বোহাইড্রেট রয়েছে ০. ৭২ গ্রাম। আরও রয়েছে প্রোটিন ১২.৫৬ গ্রাম, এবং ফসফরাস থাকে ১৯৮ মিলিগ্রাম, ফ্যাট রয়েছে ৯.৫১ গ্রাম। পটাশিয়াম ১৩৮ মিলিগ্রাম, জিংক রয়েছে ১.২৯ মিলিগ্রাম। একটি ডিমে এ সকল উপাদান সমূহ রয়েছে।

বিশেষ করে যারা সাদা অংশ ও হলুদ অংশটি বুঝতে পারেনা তাদের জন্য বলা হচ্ছে। অনেক চিকিৎসক রয়েছে বলে থাকে সাদা অংশটি খেতে এবং হলুদ অংশটি ফেলে দিতে কিসের জন্য বলে থাকে বলতে পারবেন? কি পারবেন না তো? তবে জেনে নিন। সাদা অংশটি প্রোটিন এবং হলুদ অংশটিতে রয়েছে ফ্যাট এর জন্যই চিকিৎসকরা সাদা অংশটি খেতে বাধ্য করে।

অনেক শিশুদের মেধা শক্তির সমস্যা হয়ে থাকে এর জন্য দৈনন্দিন ভাবে শিশুর মেধা বৃদ্ধি করতে হলে নিয়মিত সিদ্ধ ডিম খাওয়াতে পারেন। ডিমের রয়েছে ভিটামিন এ যার ফলে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়। আর কুসুমে থাকা ভিটামিন ডি হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

পুষ্টিবিদদের মতে, সকালে নাস্তার সঙ্গে কেউ যদি নিয়মিত ডিম খায় তাহলে শারীরিকভাবে নানা ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। জেনে নিন সকালে সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এবং কি কি উপকারিতা পাওয়া সম্ভব বিস্তারিত জেনে নিন-

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি-ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ। যার ফলে দৃষ্টিশক্তি খুব সহজেই বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়। এছাড়াও চোখের ছানি পড়া থেকে রক্ষা করে।

কাজের এনার্জি বৃদ্ধি-একটি টিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শক্তির সমূহ। তাই ডিমে থাকা ভিটামিন দাঁড়ায় এনার্জি পাওয়া সম্ভব। আপনি যদি এক্সট্রা ভাবে দেহের শক্তি যোগান দিতে চান তাহলে অবশ্যই সকালের নাস্তায় একটি করে সেদ্ধ ডিম খাওয়ার তালিকায় অবশ্যই রাখুন। এতে আপনাকে আলাদা একটি এনার্জি এনে দেবে।

ওজন কমাতে-ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এর জন্য সকালে সিদ্ধ ডিম খেলে খিদার পরিমাণ কমে আসবে। এর ফলে ওজন কমাতেও বেশ সাহায্য করবে। আপনি যদি নিয়মিত সকালের নাস্তায় ডিম রাখতে পারেন তাহলে অনেকক্ষণ আপনার পেট ভরিয়ে রাখবে। ফলে বারবার খিদা লাগা থেকে আপনি খুব সহজেই মুক্তি পাবেন এবং এতে ওজন বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনাও খুব কম।

চুলের যত্ন-চুলের যত্নের জন্য প্রতিদিন নিয়মিত সিদ্ধ ডিম খেতে পারেন। কেননা ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিনের চাহিদা। এর ফলে শরীরের সব ধরনের প্রোটিন কোষ গঠনে সাহায্য করে এবং চুলের জন্যেও রয়েছে বিশেষ উপকারিতার মত উপাদান।

কাঁচা ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

অনেকেই রয়েছে কাঁচা ডিম খেতে পছন্দ করে। কিন্তু বেশির ভাগই রয়েছে কাঁচা ডিম খেতে গেলে বমি বমি ভাব এবং বদ হজমের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এছাড়াও কাঁচা ডিম খেলে এলার্জির সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। কারণ কাঁচা ডিম স্বাস্থ্যের জন্য অতটা ভালো নয়। অনেকেই মনে করেন কাঁচা ডিম খাওয়া শরীরের জন্য বেশ উপকারী এবং ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। এটা আসলেই একটি ভুল ধারণা।

যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে তারা যদি কাঁচা ডিম খেয়ে ফেলে তাহলে অবশ্যই বদ হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও পেট ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে, গ্যাস সহ পেটের ভেতর নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই কাঁচা ডিমকে অবশ্যই না বলুন। তার চেয়ে অমলেট অথবা সিদ্ধ করে ডিম খাওয়ার চেষ্টা করুন।

হাঁসের ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা

বিশেষ করে হাঁসের ডিম আমাদের পুষ্টিগুণ সম্পন্ন পরিচিত খাদ্য। আর একটি ডিমে পুষ্টিগুণে ভরপুর উপাদান রয়েছে। এর জন্যই যে কোন সমস্যার জন্য অথবা দুর্বলতার জন্য ডিম শরীরের জন্য বেশ কার্যকারি উপাদান সমূহ রয়েছে। আমরা অনেকেই মুরগির ডিম বেশি খেয়ে থাকি আবার হাঁসের ডিম অনেকেই নাকোছ বোধ করি। এছাড়াও হাঁসের ডিমের প্রশংসা খুবই কমই শোনা যায়।

সাধারণত মুরগির ডিম ছোট এবং হাঁসের ডিম বড় আকৃতি হয়। এর খোসা মোটা হয়ে থাকে। খেতে মুরগির ডিম এবং হাঁসের ডিম একই খেতে স্বাদ লাগে। হাঁসের ডিম খুব সহজেই নষ্ট হয় না এটি বেশিদিন ধরে ভালো থাকে। কোন প্রকার ফ্রিজে না রেখেও এটি অনায়াসেই নরমালে রাখা যায়। বিশেষ করে হাঁসের ডিমের ও উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে।

হাঁসের ডিমের উপকারিতা

আমাদের দেহে শক্তির যোগান দেওয়ার জন্য অবশ্যই একটি হাঁসের ডিম হলেই যথেষ্ট। কেননা সকালে আপনি একটি হাঁসের ডিম খেয়ে নিলেই সারাদিনের এনার্জি ও শক্তি জগতে সাহায্য করবে। মানুষের নানা ধরনের কর্মের উপর চাপ রয়েছে এর জন্যই মূলত আমাদের শক্তির প্রচুর প্রয়োজন পড়ে। তাই সারাদিনের ক্লান্ত দূর করতে সকালের নাস্তায় হাঁসের ডিম রাখতে পারেন।

আপনি যদি প্রচুর পরিমাণে ব্যায়াম অথবা জিম করে থাকেন তাহলে একটি হাঁসের ডিম আপনার জন্য বিশেষ খাদ্য হবে। কেননা ব্যায়াম করতে শারীরিকভাবে শক্তির প্রয়োজন পড়ে এর জন্যই হাঁসের ডিম খেলে শক্তি যোগান দিতে সক্ষম হবে।

প্রতিদিন ২টা করে ডিম খেলে কি হয়

অনেকেই অনেক ধরনের প্রশ্ন করে থাকে দিনে কয়টি করে ডিম খাওয়া উচিত। আবার অনেকেই মনে করেন প্রতিদিন যদি দুটো করে ডিম খায় তাহলে বদ হজমের সমস্যা হতে পারে নাকি? বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন দুটো করে ডিম খেলে কোন ধরনের ক্ষতি নেই। বরং এতে বেশ কিছু উপকারিতা পাওয়া সম্ভব।

নিয়মিত প্রতিদিন দুটো করে ডিম খেলে শরীরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি, বায়োটিন সহ আরো অনেক উপকারিতা উপাদান পাওয়া যায়। হৃদরোগের মতো সমস্যার ও ঝুঁকি কমায় যদি কেউ টানা ২/৩ সপ্তাহ দুইটি করে নিয়মিত ডিম খায়। যারা ওজন বাড়াতে চাচ্ছেন তারা নিয়মিত খাবার তালিকায় দুই থেকে তিনটি ডিম রাখুন।

উপস্থাপনা-ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা 

প্রিয় পাঠক, আপনি হয়তো এতক্ষণে জেনে গেছেন ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। তাই এখন থেকে আপনি জানতে পারবেন ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা বিষয়ে। আর্টিকেলটি আপনার কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন। এ ধরনের পোস্ট করতে আমাদের ওয়েবসাইটটি রেগুলার ভিজিট করুন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url