অতিরিক্ত ঘুম থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
প্রিয় পাঠক, আপনি কি অতিরিক্ত ঘুম থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় খুঁজছেন? তাহলে
সঠিক জায়গাতে এসে গেছেন। কারণ এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে অতিরিক্ত ঘুম থেকে মুক্তি
পাওয়ার উপায় সম্পর্কে বিশেষ আলোচনা করব। অবশ্যই আপনি জানতে পারবেন অতিরিক্ত ঘুম
থেকে মুক্তির উপায় তাই জানতে হলে অবশ্যই এ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
অনেকেই অতিরিক্ত ঘুম থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। এবং অনেকেই
রয়েছে অতিরিক্ত ঘুম থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানেনা। তাই তাদের জন্যই এই
আর্টিকেলটি আমি লিখতে বসেছি, যেন অতিরিক্ত ঘুম থেকে খুব সহজেই মুক্তি পেয়ে যায়।
তাই দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক এই আর্টিকেলটি এবং অতিরিক্ত ঘুম থেকে মুক্তি
পেতে হলে এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ অতিরিক্ত ঘুম থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
ভূমিকা-অতিরিক্ত ঘুম থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়
বিভিন্ন সময় এ অতিরিক্ত ঘুমের কারণে আমাদের শরীরের নানা ধরনের রোগব্যাধি দেখা
দিতে শুরু করে। আবার অনেকেই চেষ্টা করে অতিরিক্ত ঘুম থেকে বিরত থাকতে, কিন্তু তা
পারে না। শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আমাদের ঘুম খুবই প্রয়োজন কিন্তু কথায়
রয়েছে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়। তাই অতিরিক্ত ঘুম ও শরীর স্বাস্থ্যের জন্য
ভালো কিছু নিয়ে আসার সম্ভাবনা নেই।
অতিরিক্ত ঘুম থেকে মুক্তির উপায়
একজন ব্যক্তি যদি ৯ ঘন্টার উপরে ঘুমায় তাহলে সেটাকে বলা হয় অতিরক্ত ঘুম। তাই এই
অতিরিক্ত ঘুম শরীরের নানা ধরনের সমস্যা জন্য সম্মুখীন হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের
মতে, অতিরিক্ত ঘুমের একটি নাম রয়েছে। নামটি হচ্ছে হাইপারসৌমোনিয়া। যাদের ৯
ঘণ্টার উপরে অতিরিক্ত ঘুমাই তাদের এর একটি রয়েছে। এবং যাদের হাইপারসমোনিয়া
রয়েছে তাদের বেশ কয়েকটি রোগের লক্ষণও রয়েছে। যেমন-
- স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়া
- শরীরের শক্তি কমে যাওয়া
- কোন কিছু নিয়ে মানসিক চিন্তিত হওয়া
এই তিনটা সমস্যার কারণে অতিরিক্ত ঘুম হয়ে থাকে। এছাড়াও ঘুমের ভেতরেই অনেকের
শ্বাসকষ্টের সমস্যাও দেখা যায়। এর জন্যও অতিরিক্ত ঘুম তৈরি হয়। আবার কোন কোন
ক্ষেত্রে কেউ দীর্ঘদিন অসুস্থতা থাকার ফলে অতিরিক্ত ঘুম হতে পারে। আমাদের আশেপাশে
অনেকেরই এই অতিরিক্ত ঘুমানোর বদ অভ্যাস রয়েছে । তাই চলুন অতিরিক্ত ঘুম থেকে
মুক্তির উপায় জেনে নিই-
আপনি কখন ঘুম থেকে উঠবেন তার একটি সময় নির্দিষ্ট সেট করুন। তারপর আপনার হাতে
থাকা মুঠোফোনটি এলার্ম সেট করুন। দুই তিনবার অ্যালার্ম সেট করে, অলসতা কে লাথি
মেরে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পড়ুন। এবং প্রতিদিন একই সময় ঘুম থেকে উঠার চেষ্টা
করুন। আরেকটি বিষয় হচ্ছে আপনি যে ঘড়ি অথবা মুঠোফোনে এলার্ম সেট করবেন সেটি
বিছানা থেকে অবশ্যই দূরে রাখুন।
কেননা বন্ধ করতে হলেও যেন বিছানা থেকে উঠে বন্ধ করেন তাহলে আর ঘুমানোর তেমন একটা
ইচ্ছে হবে না। আমাদের ভেতরে অনেকেই রয়েছে বলে এলার্ম টা শেষ হোক ৫ মিনিট পর ঘুম
থেকে উঠছি। একথা বলার পর আবারো এক ঘণ্টার বেশি ঘুম হয়ে যেতে পারে তাই এলারাম
সঙ্গে সঙ্গেই ঘুম থেকে উঠে পড়ুন।
কোন ধরনের দুশ্চিন্তা থেকে থাকলে সেটাকে সমাধান করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুন।
অতিরিক্ত চিন্তা করলে মানসিক ভাবে ব্রেনে চাপ পড়ে এর কারণে অতিরিক্ত ঘুম হওয়ার
কারণ রয়েছে। এবং অনেক সময়ই অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে আপনাকে সঠিক সময়ই
ঘুমাতে দেবে না। তাই প্রতিদিন নিয়মিত সঠিক সময় ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এবং সঠিক
সময়ই ঘুম থেকে উঠে পড়ুন।
দিনের বেলা ঘুম কমানোর উপায়
খাওয়ার পর অনেকেই ঘুম ঘুম ভাব হয়। বিশেষ করে দুপুরের প্রধান খাদ্যের পর অনেকের
ঘুমানোর চিন্তা চেতনা জেগে ওঠে। কারণ খাওয়ার পর আমাদের মস্তিষ্কে অক্সিজেন
সরবরাহ হওয়ার কারণেই শরীরে ঘুম ঘুম ভাব আসে। এটি একটি সাধারণ বিষয় এবং কয়েকটি
কাজ করলেই এই স্বাভাবিক বিষয়টি খুব সহজেই দূর করা সম্ভব।
যখন দুপুরের পর অনেকের কাজ থাকে। তখন অনেকেরই ঘুমের জন্য শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে
তখন কাজটি বাদ দিয়ে ঘুমানো টাই বেশি জরুরী হয়ে পড়ে। এরকম সমস্যায় অনেকেই
সম্মুখীন হয়ে থাকে তাই এ ধরনের সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কয়েকটি কাজ করলেই
আপনি খুব সহজেই বেরিয়ে আসতে পারবেন। জেনে নিন বিষয়গুলো-
পানি পান-পানি ঘুম দূর করার জন্য ভালো কাজ করে। এবং পানি পান করলে দেহের কোষ গুলো
নতুন ভাবে তৈরি হয়। আর যখন অতিরিক্ত ঘুম আসে তখন সঙ্গে সঙ্গে এক থেকে দুই গ্লাস
পানি পান করুন। দেখবেন কিছুক্ষণের ভিতরে ঘুম ঘুম ভাব খুব সহজেই দূর হয়ে গেছে।
একই সঙ্গে পানি পান করলে দেহের মস্তিষ্ক নতুনভাবে কাজ তৈরি করে।
চা কফি-শরীরের ঝিম ধরা অথবা ঘুম দূর করার জন্য গরম গরম চা কফি পান করা সবচেয়ে
কার্যকারী উপাদান রয়েছে। দুপুরের খাবারের পরও আপনি চা অথবা গরম কফি খেতে পারেন,
এতে দ্রুত ঝিম ধরা ভাবটা দূর করে দেবে। আমাদের মস্তিষ্ককে জাগানোর জন্য চা কফিতে
রয়েছে ক্যাফেইন।
চোখে মুখে পানি দিন-দুপুরে খাওয়ার পরে ঘুম আসলে অথবা কোন কাজ বিষয়ে ঘুম আসলে
চোখে মুখে পানির ছিটা দিন। এ সময় হালকা ঠান্ডা পানি দিয়ে চোখ মুখ ধুয়ে নিলেই
নিমিষেই ঘুম ঘুম ভাব দূর হয়ে যাবে।
হাঁটাহাঁটি করুন-বসে থাকলে অথবা শুয়ে থাকলে ঘুম তো অবশ্যই আসার কথা। তাই যখন ঘুম
আসবে তখন আপনি হাঁটাহাঁটি করুন। হাটাহাটি করলে এতে শরীরের অলসতা ও দূর হবে এবং
ঝিম ধরা ভাব সেটিও খুব সহজেই দূর হয়ে যাবে। তাই পাঁচ মিনিটের জন্যেও হাঁটুন।
ঘুম কমানোর প্রাকৃতিক উপায়
অতিরিক্ত ঘুম কমানোর প্রাকৃতিকভাবেই কিছু নিয়ম কারণ রয়েছে। সেগুলোকে টার্গেট
করে চললেই আপনি খুব সহজেই এই অতিরিক্ত ঘুম থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন। তাই অবশ্যই
ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করুন। তার সঙ্গে শাকসবজি এবং প্রোটিনযুক্ত খাদ্য খাওয়ার
চেষ্টা করুন। অস্বাস্থ্যকর খাদ্য থেকে বিরত থাকুন। কারণ ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্য
থেকে ঘুমের চাপ সৃষ্টি এবং শরীর স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘুম কমানোর ব্যায়াম
অনেকের ঘুমের সমস্যা হয় আবার অনেকের ঘুম হয় অতিরিক্ত। তাই ঘুম কমানোর ব্যায়ামও
রয়েছে আপনি খাওয়া-দাওয়ার পর দেখেন যে আমার শরীরটি ঝিমঝিম করছে তাহলে অবশ্যই
জোরে জোরে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করুন। অথবা 10 থেকে 15 মিনিট হাটাহাটি শুরু করুন।
এবং আশেপাশে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে গল্পতে মেতে উঠুন। দেখবেন খুব সহজেই ঘুম দূর
হয়ে গেছে। এই ব্যায়ামগুলো করলেই আপনি ঘুম কমাতে পারবেন।
পড়ার সময় ঘুম কমানোর উপায়
অনেক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে পড়ার প্রতি প্রচুর আকর্ষণ। যার ফলে তারা ৫-৬ ঘন্টা
টানা পড়াশুনাতে মেতে থাকে। এর জন্যই তাদের শরীরের অলসতা থেকে চোখে ঘুম ঘুম ভাবটা
শুরু হয়। তাই মোটেও টানা ৫-৬ ঘন্টা পড়া উচিত নয় এটি স্বাস্থ্যের জন্যও
ক্ষতিকারক হতে পারে। তাই সময় মতো ২ ঘণ্টা পড়ার পর 20 মিনিট বিরতি নিতে হবে। এ
সময় একটু হাঁটাহাঁটি অথবা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন।
অনেক ছাত্র-ছাত্রীর অভিযোগ তারা ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারে না ঘুমানোর জন্য। এবং
পড়তে বসলেই ঘুম আসে এরকম কোথাও শোনা যায়। এর জন্য পড়াশোনার বিশেষভাবে ক্ষতি
হয়ে থাকে তার পাশাপাশি রেজাল্ট খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই চলুন জেনে নেই
পড়তে বসে ঘুম তাড়ানোর উপায় গুলো-
স্বাস্থ্যকর খাবার-পড়াশোনার সময় ঘুমকে ছুটি দিতে স্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়া অতি
জরুরি। তাই ফাইবার যুক্ত এবং পুষ্টি কর খাদ্য খাওয়ার তালিকায় অবশ্যই রাখতে হবে।
ডাল, সালাদ, ফল ও শাকসবজি খাবার খাওয়া জরুরী।
প্রয়োজন ভালো ঘুম-পড়াশোনার জন্য রাতে নিয়মিত নির্ধারিত সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস
তৈরি করুন। রাতে ৭ থেকে আট ৮ অন্তত ঘুমানোর চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত ঘুমাবেন না
অথবা কমও ঘুমাবেন না। তাহলে দেখবেন পড়াশোনার সময় ঘুমানোর চাপটা অনেকটাই কমে
গেছে।
পানি পান করুন-আপনি যখন পড়ার টেবিলে বসে ঝিমাচ্ছেন তখন অবশ্যই পানি জাতীয় খাবার
অথবা প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। চা কফি এজাতীয় পানীয় পান করতে পারেন চা কপি
ঘুম তাড়ানোর জন্য ভালো কাজ করে থাকে।
উপস্থাপনা-অতিরিক্ত ঘুম থেকে মুক্তির পাওয়ার উপায়
প্রিয় পাঠক, আপনি হয়তো এতক্ষণে জেনে গেছেন কিভাবে অতিরিক্ত ঘুম থেকে মুক্তি
পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানব। তাই আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই আর্টিকেলটি
পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই জেনে গেছেন কিভাবে অতিরিক্ত ঘুম থেকে মুক্তি পাওয়া
যায়। এই পোস্টটি আপনার কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন। আর্টিকেলটি
শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url