অবিবাহিত মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক হলে করণীয়
শরীর দুর্বল হওয়ার লক্ষণ এবং এর প্রতিকারপ্রিয় পাঠক, আপনি কি অবিবাহিত মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক হলে করণীয় নিয়ে জানতে চান? তাহলে সঠিক জায়গাতেই আপনি পৌঁছে গেছেন। কারণ আমি অবিবাহিত মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক হলে করণীয় কি এ বিষয়ে বিশেষ আলোচনা করব। আপনার মনে যদি প্রশ্ন এসে থাকে মেয়েদের অনিমিত মাসিক কিভাবে বন্ধ করা যায় তাহলে আর্টিকেলটি শুধু আপনার জন্য।
ধ্অবিবাহিত মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক হলে করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। তো বন্ধুরা চলুন দেরি না করে আজকের এই অবিবাহিত মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক হলে করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন। আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আশা করি এই পোস্টটি পড়ে অবিবাহিত মেয়েদের অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
পোস্ট সূচীপত্রঃ অবিবাহিত মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক হলে করণীয়
ভূমিকা-অবিবাহিত মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক হলে করণীয়
নারীদের নিয়মিত মাসিক হওয়াটা স্বাভাবিক কিন্তু যদি অনিয়মিত মাসিক হয়ে থাকে তাহলে চিন্তার বিষয় রয়েছে। অনিয়মিত মাসিক হলে নারীদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। অনিয়মিত মাসিক বন্ধ না হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অনিয়মিত মাসিক বলতে যাদের মাসিক দুই মাস পর তিন মাস পর এবং কারো কারো চার পাঁচ মাস পরেও মাসিক শুরু হয়। আর এর জন্যই বলা হয় অনিয়মিত মাসিক।
অনিয়মিত মাসিক হলে নারীদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে। অনিয়মিত মাসিক হওয়ার বিশেষ কিছু কারণ রয়েছে সেগুলোর জন্য অনিয়মিত মাসিক দেখা দেয়। অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কারণ হচ্ছে-অতিরিক্ত টেনশন করা, খারাপ পরিবেশে বসবাস করা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়া, অপরিচ্ছন্নতা থাকা এবং অতিরিক্ত ধূমপান বা মদ্যপান করা।
এইগুলো কারণেই মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই অবশ্যই এ সকল সমস্যাগুলো থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। নিয়মিত মাসিক হলে শরীরের হরমোনাল ঠিক থাকে। আর যদি অনিয়মিত মাসিক হয় তাহলে দেহের নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। তাই অনিয়মিত মাসিক হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ
মহিলাদের পিরিয়ড বিভিন্ন জনের বিভিন্ন রকম ভাবে শুরু হয়। কারো কারো প্রতি মাসের শুরুতেই পিরিয়ড হয় এবং কারো কারো মাসের শেষের দিকেও পিরিয়ড হয়। প্রথম প্রথম নারীদের অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে তাই বলে ভয়ের কিছু নেই। প্রথম কয়েক বছর অনিয়মিত পিরিয়ড হওয়ার পরে স্বাভাবিকভাবে নিয়মিত পিরিয়ড শুরু হবে। আর যদি নিয়মিত পিরিয়ডের পর অনিয়মিত পিরিয়ড শুরু হয় তাহলে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।
মেয়েদের পিরিয়ড বন্ধ হওয়ার কিছু কারণ আছে যার ফলে পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায় এবং অনিয়মিত পিরিয়ড শুরু হয়। যেসব কারণে অনিয়মিত পিরিয়ড শুরু হয় স্বাস্থ্যের অবস্থা ঠিক নয়, বেশিরভাগ চিন্তা করা। খাওয়া দাওয়া অনিয়ম করার জন্যেও অনেক সময় পিরিয়ড বন্ধ হওয়ার কারণ হতে পারে।
মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ কিছু নীচে উল্লেখযোগ্য দেওয়া হলো-
মানসিক চাপ-বিশেষজ্ঞদের মতে, জানা গেছে অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং উচ্চ স্তরে উদ্যোগ কারণে অনিমিত মাসিক হতে পারে।
খাওয়া-দাওয়া অনাহার-আপনি যদি নিয়মিত খাওয়া দাওয়া থেকে ছিটকে পড়েন তাহলে আপনার অনিয়মিত মাসিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি-আপনি যদি হঠাৎ করেই জন্মনিয়ন্ত্রণ করা বড়ি খাওয়া বন্ধ করেন তাহলে অনিয়মিত মাসিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
হরমোনের সমস্যা-আপনার যদি হরমোনের সমস্যা থেকে থাকে এবং জরায়ুতে আস্তরণের গঠনকে স্বাভাবিক রাখে এবং যদি হরমোনের ভারসাম্যতা থাকে তাহলে এর কারণে অনিয়মিত মাসিক হতে পারে।
লাইফ স্টাইল পরিবর্তন-আপনি যদি অতিরিক্ত ব্যায়াম করে থাকেন তাহলে সেটিকে কমিয়ে আনতে হবে কারণ অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে অনিয়মিত মাসিক হতে পারে।
দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায়
আপনি যদি দ্রুত মাসিক হওয়ার বিষয়ে জানতে চান তাহলে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি গ্রহণ করুন। কারণ ভিটামিন সি শরীরের বিভিন্ন প্রকারের রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া পালন করে এবং মাসিক হওয়ার সম্ভাবনাও খুব তাড়াতাড়ি হয়। তাই বেশি বেশি ভিটামিন সি যুক্ত খাদ্য আপনার দ্রুত মাসিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভিটামিন সি- অথবা টক জাতীয় খাদ্য আপনার দ্রুত মাসিকের জন্য প্রস্তুত করে দেয়। ভিটামিন সি লেবু, কমলা লেবু, টমেটো, ব্রকলি, পার্সলে ইত্যাদি। এই ফলগুলো খেলে আপনি ভিটামিন সি পেয়ে যাবেন এবং নিয়মিত মাসিক দ্রুত শুরু হবে।
গরম পানি-গরম পানি দ্রুত মাসের জন্য আপনি সেঁক দিতে পারেন। হটপট অথবা বোতলে গরম পানি ভরে ১০-২০ মিনিট সেঁক দিন এবং এই পদ্ধতি আপনি যদি নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে দ্রুত মাসিক হতে পারে।
যৌন মিলন-আপনি হয়তো আশ্চর্য হবেন জেনে যে যদি সহবাস করেন তাহলে শরীরের নানা ধরনের হরমোন উৎপত্তি ঘটায় সে কারণেই দ্রুত মাসিক হতে সাহায্য করে। এবং এই পদ্ধতি শুধুমাত্র বিবাহিত মেয়েদের জন্য সীমাবদ্ধ।
অনিয়মিত মাসিকের ঔষধ
অনিয়মিত মাসিকের ঘরোয়া কিছু ঔষধ রয়েছে যেগুলো অনুসরণ করলেই আপনি ঘরোয়া ভাবে চিকিৎসা নিতে পারবেন। নিয়মিত ঠিক এর জন্য কিছু খাদ্য রয়েছে এ খাদ্যগুলো গ্রহণ করলে দ্রুত মাসিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বিবাহিত নারীদের গর্ভে যদি বাচ্চা থাকে তাদেরকে এ খাদ্যগুলো খাওয়া উচিত নয়। কারণ এ খাদ্য গুলো বিবাহিতরা খেলে গর্ভপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
পার্সলে-পার্সলেতে রয়েছে মাইরিসটিসেন এবং আপি অল যার ফলে মাসিক কে নিয়মিত করতে সাহায্য করে।
পেঁপে-পেপেতে এমন ধরনের উপাদান রয়েছে যার ফলে মাসিক কে দ্রুত এগিয়ে আসতে পেঁপে বেশ কার্যকারী উপকারিতা রয়েছে।
আদা-আপনি যদি অনিয়মিত মাসিকের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে নিয়মিত মাসিকের জন্য নিয়মিত আদা চা খেতে পারেন। অথবা অনেকের চা খেতে হয়তো অপছন্দ বোধ মনে করেন এর কারণে আপনি আদা গুড় একসঙ্গে চিবিয়ে খেতে পারেন।
ঘন ঘন মাসিক হলে কি করণীয়
অনেক নারীদের ঘন ঘন মাসিক হওয়ার কারণ দেখা যায়। ঘনঘন মাসিক হওয়ার সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি অযত্ন এবং ওজন কম হওয়া। তার সঙ্গে রয়েছে মানসিক চাপ এগুলো জন্যই মূলত ঘন ঘন মাসিক মেয়েদের হতে থাকে। এরকম সমস্যা দেখা দিলে শরীরের নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে তাই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
একটি নারীর নিয়মিত মাসিক বলা হয় যখন তার ২৮ দিনের ভিতরে মাসিক অথবা পিরিয়ড হয়। এই পিরিয়ডটিকে বলা হয় স্বাভাবিক পিরিয়ড অথবা যদি সাত দিন কম অথবা সাত দিন বেশি হয় তাহলেও সেটিকে বলা হয় নিয়মিত এবং স্বাভাবিক পিরিয়ড। কিন্তু ২১ দিনের আগে অথবা ৩৫ দিনের পরে পিরিয়ড হলে এটিকে বলা হয় অনিয়মিত পিরিয়ড।
যখন কারো স্বাভাবিক অথবা নিয়মিত মাসিক না হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে গিয়ে সঠিক ভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। যদি ২১ দিনের আগেই পিরিয়ড শুরু হয় তাহলে ডাক্তারের কাছে অবশ্যই যাবেন, এবং ৩৫ দিনের পরেও পিরিয়ড হলে ডক্টরের কাছে গিয়ে পরামর্শ নেবেন। আর যদি ২১ দিনের পর আর ৩৫ দিনের আগে পিরিয়ড হয় তাহলে টেনশনের কিছু নেই এটি স্বাভাবিক পিরিয়ড।
মাসিক হওয়ার ব্যায়াম
পিরিয়ড শুরু হওয়ার সময় অনেকের হরমোন জনিত সমস্যার কারণে ব্যথা অনুভব হয়। পিরিয়ড হওয়ার জন্য ব্যায়াম করতে পারেন। পিরিয়ডের ব্যায়াম হাটাহাটি করা, সাইকেলিং করা, দৌড়ানো ইত্যাদি। তবে বেশি উচ্চ মাত্রায় দৌড়ানো ঠিক নয়। পিরিয়ড চলাকালীন শরীরের যত্ন নিন এবং সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অবলম্বন করুন।
বন্ধ মাসিক চালু করার উপায়
মাসিক যদি হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় তাহলে কি করবেন? অবশ্যই কিছু না কিছু করা উচিত এবং ডক্টরের পরামর্শ নেওয়া অতি জরুরি। তার সঙ্গে আপনি ঘরোয়াভাবে কিছু খাবার খেয়ে দেখতে পারেন বন্ধ মাসিক চালু হতেও পারে। তাই ভিটামিন সি খাদ্য গ্রহণ করুন, লেবু, টমেটো, কমলালেবু এবং টক জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করে দেখতে পারেন কারণ এসব খাদ্য গুলোর মাধ্যমে মাসিক চালু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অনিয়মিত মাসিক হলে কি বাচ্চা হয়
অনিয়মিত মাসিক সমস্যা অনেক নারীদেরই দেখতে পাওয়া যায় এবং শোনা যায়। বিবাহিত নারীদের মনে অনেকেরই প্রশ্ন থাকে অনিয়মিত মাসিক হলে কি বাচ্চা হয়? এই ধরনের নানা রকম প্রশ্ন বিবাহিত নারীদের মনে থাকে। এবং অনেকেই চিন্তিত হয়ে পড়ে যে অনিয়মিত মাসিক হলে বাচ্চা হবে কিনা? আসলেই এটি চিন্তার বিষয় কারণ অনিয়মিত মাসিকের জন্য বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।
উপরে কিছু টিপস দেওয়া রয়েছে যা আপনি হয়তো এতক্ষণে পড়েছেন তাই সেগুলো যদি ভালোমতো ফলো করেন তাহলে অনিয়মিত মাসিক দ্রুত নিয়মিত মাসিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অবশ্যই স্বাভাবিক মাসিকের জন্য কথা বলাটা জরুরী।
নিয়মিত মাসিকের জন্য আপনাকে সবসময় সুস্থতা থাকার চেষ্টা করতে হবে। সুস্থ সবল থাকার জন্য অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করুন। এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকে বেরিয়ে এসে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করুন। অনেকের ওজন কম থাকার কারণে অনিয়মিত মাসিক হয় তাই বেশি বেশি পুষ্টিকর খাদ্য আর স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া অতি জরুরী।
উপস্থাপনা-অবিবাহিত মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক হলে করণীয়
প্রিয় পাঠক, আশা করছি আপনি হয়তো অবিবাহিত মেয়েদের অনামিত মাসিক হলে করণীয় কি সে সকল বিষয়ে বিস্তারিত জেনে গেছেন। এ সকল টিপসগুলো আপনি যদি নিয়ম করে মেনে চলেন তাহলে অবশ্যই অনিয়মিত মাসিক থেকে খুব সহজেই রক্ষা পাবেন। আর অবশ্যই আপনাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে অনিয়মিত মাসিক হলে চিকিৎসকের পরামর্শটি সবচেয়ে জরুরী।
এ পোস্টটি পড়ে কেমন লাগলো আপনার মতামত দিয়ে আমাদের উৎসর্গ করুন। অথবা কোন ধরনের প্রশ্ন থাকলে আমাদেরকে অবশ্যই প্রশ্ন করুন, আমরা অবশ্যই আপনার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সহযোগিতা করব। এরকম ধরনের পোস্ট আরো পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি রেগুলার ভিজিট করুন। এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url