বাতের ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানুন
কোলেস্টেরল কমানোর প্রাকৃতিক উপায়প্রিয় পাঠক, আজকে আমি বাতের ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিশেষ ভাবে
আলোচনা করব। আপনি যদি বাত ব্যথার রোগী হয়ে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র
আপনার জন্য হতে চলেছে। বাত ব্যথা এমন একটি রোগ যে রোগের কারণে অনেকেই সমস্যায়
ভুগেন এবং এর প্রতিকার অনেকেই খুঁজে পায় না। তাদের কথা ভেবেই আমরা আর্টিকেলটি
লিখতে বসেছি। এবং এর জন্যই বাতের ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত
আলোচনা করব।
বাতের ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে অনেকেই গুগলে অথবা ইউটিউবে সার্চ করে
থাকে। এর ভেতর অনেকেই সঠিকভাবে বাত ব্যথা দূর করার নিয়ম অথবা টিপসগুলো জানতে
পারে না। এর জন্যই আমরা অনেক কয়টা ডক্টরের সঙ্গে পরামর্শ নিয়ে আপনাদের জন্য বাত
ব্যথার ঘরোয়া ভাবে চিকিৎসার টিপস নিয়ে হাজির হয়েছি। তাই চলুন দেরি না করে জেনে
নিন বাতের ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। বাতব্যথা দূর করতে এবং সঠিক
নিয়ম জানতে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ বাতের ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানুন
ভূমিকা-বাতের ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়
আমাদেরকে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন এবং বাত ব্যথা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন এর জন্যই
এই আর্টিকেলটি মাধ্যমে সুন্দরভাবে টিপসগুলো বলে দেওয়া হচ্ছে। আপনি যদি নিজের
ধাপগুলো শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে পারেন তাহলে অবশ্যই বাত ব্যথা থেকে
সহজেই মুক্তি পাবেন। যেসব বিষয়ে আজকে আলোচনা করব যেমন-কি খেলে বাতের ব্যথা
বাড়ে, বাতের ওষুধের নাম, বাত ব্যথার ব্যায়াম, বাতের ব্যথা কোথায় কোথায় হয়,
হাঁটুতে বাতের ব্যথা, বাতের ব্যথা কমানোর ঔষধ, বাতের ব্যথার আয়ুর্বেদিক ঔষধ,
বাতের ব্যথার ট্যাবলেট এই টিপসগুলো সম্পর্কে বিশেষ আলোচনা করব।
কি খেলে বাতের ব্যথা বাড়ে
মূলত ৫০ বছরের ও বেশি বয়স্কদের বাতের ব্যথার সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও অনেক কম
বয়সে বাত ব্যথা দেখা দেয়। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই খাদ্য তালিকায় নজর
দেওয়া উচিত এবং খাদ্য পরিবর্তন আনা খুবই জরুরী হয়ে ওঠে। এমন কিছু খাদ্য রয়েছে
যেসব খাদ্যগুলো খেলে বাদ ব্যথার সংক্রমণ আরো বৃদ্ধি করে। যেমন-
মিষ্টি জাতীয় খাদ্য-অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাদ্য শরীরের জন্য ক্ষতিকারক এটা
কম বেশি আমরা সবাই জানি। চিনি সাইটোকাইনের মাত্রা উচ্চ পরিমাণে নিয়ে যায় এর
কারণেই মাংসপেশীতে অথবা বাত ব্যথা সৃষ্টি হয়। এছাড়াও চিনিযুক্ত খাদ্য সব ধরনের
অস্তের সন্ধি এবং মাংসপেশীর ব্যথা বৃদ্ধি করে।
ডিমের কুসুম-ডিমের কুসুমে রয়েছে অ্যারাকিডনিক অ্যাসিড এর ফলে বাতের ব্যথা
বাড়িয়ে দেয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা গেছে এই ফ্যাট টি এসিড অথবা বাথ ব্যথা তৈরি
করতে সক্ষম হয়। যাদের বাত ব্যথার সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই ডিমের কুসুম খাওয়া
থেকে বিরত থাকুন।
দুগ্ধজাতীয় খাদ্য-যাদের বাত ব্যথার সমস্যা রয়েছে তারা যদি দুগ্ধজাতীয়
খাদ্য গ্রহণ করে তাহলে এই খাবারের ফলে ব্যথা বেড়ে যায়। এবং দুগ্ধ জাতীয় খাবার
খাওয়ার কারণে ব্যথা বাড়ার কারণ হচ্ছে, দুগ্ধ জাতীয় খাদ্যে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে প্রোটিন। যার ফলে এই প্রোটিনের মাধ্যমে বাত ব্যথার মাত্রা আরো বেড়ে
যায়। এছাড়াও অ্যালার্জি রোগীরা দুগ্ধ জাতীয় খাবার খেলে তাদেরও অ্যালার্জি
বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাতের ঔষধের নাম
বাত ব্যথা এমন একটি রোগ এ রোগের কারণে পুরো শরীরে ব্যথা অনুভব শুরু হয়। এবং
শরীরকে ব্যথায় আকৃষ্ট করে ফেলে। বাত ব্যথার ঔষধের আগে আপনাকে অবশ্যই শরীরের
যেকোনো জায়গায় বাত ব্যথা গুলোকে শনাক্ত করতে হবে। যদি আহামরি তেমন কোন ব্যথা না
হয় তাহলে আপনি চাইলেই যে কোন দিক আয়ুর্বেদিক ঔষধ সেবন করতে পারেন। তবে অবশ্যই
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করা উচিত।
বাতের ব্যাথার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং ঔষধ ছাড়াও তারা মলম দিয়ে
থাকে যার কারণে খুব সহজেই বাত ব্যথার রোগ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তাই অবশ্যই ভালো
চিকিৎসককে বাত ব্যথার বিষয়ে খুলে বলুন এবং সঠিক পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ
করুন। এছাড়াও আপনি কিছু খাদ্য খেতে পারেন যার ফলে বাত ব্যথার আক্রমণ কমার
সম্ভাবনা অনেকটাই রয়েছে। যেমন-আদাযুক্ত চা খেতে পারেন, মেথির বীজ খেতে পারেন
এগুলোও খেলে বাত ব্যথার সংক্রমণ অনেকটাই কমে যায়।
বাতের ব্যথার ব্যায়াম
আমরা অনেকেই হয়তো জানি না ঔষধ ছাড়াও আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ সারানো সম্ভব
তাও আবার ঘরোয়া উপায়। আমরা ভাবি অসুস্থ হলেই আমাদের প্রয়োজন ঔষধ এটি
সম্পূর্ণরূপে ভুল চিন্তাভাবনা। এর কারণেই আমরা সবচেয়ে বেশি আরও অসুস্থ হয়ে পড়ি
তাই যেকোন রোগ হলেই ঔষধ সেবন থেকে দূরে থাকুন। আগে ভালোমতো রোগ শনাক্ত করে
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ গ্রহণ করুন।
ঘরোয়া উপায়ে বাত ব্যথা দূর করার একটি উপসর্গ রয়েছে যেমন ব্যায়াম। আপনি যদি
নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাহলে শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সক্ষম হবে পাশাপাশি নানা
ধরনের ভয়ানক রোগ বিদায় নিতে সক্ষম হবে। বাত ব্যথার কারণে বেশি বেশি অথবা আপনি
পুশ আপস দিতে পারেন। কেননা পুশ আপস এমনই একটি ব্যায়াম যার কারণে মাংসপেশি সহ
হাড় মজবুত করতে সহায়তা করে।
অনেকে রয়েছে পুশ আপস দিতে পারেন না এবং প্রথম প্রথম সমস্যা হতে পারে। তাই আপনি
দেওয়ালের ওপরে ভর দিয়ে দুই হাতের সাহায্যে পুশ আপস দিন। তারপর আস্তে আস্তে
মাটিতে নিজে নিজেই চেষ্টা করুন। মাটির দিকে মুখ রেখে শুয়ে পড়ুন এবং দুই হাতের
সাহায্যে উঠানামা করুন তাহলেই পুশ আপস হয়ে যাবে। এভাবে আপনি যদি নিয়মিত পুশ আপস
ব্যায়াম করতে পারেন তাহলে খুব সহজেই বাতব্যাতা থেকে মুক্তি পাবেন।
বাতের ব্যথা কোথায় কোথায় হয়
আমাদের ভেতরে অনেকের প্রশ্ন থেকে থাকে যেমন বাত ব্যথা কোথায় কোথায় হওয়ার
সম্ভাবনা রয়েছে। মূলত বাতব্যথা পুরো শরীর জুড়েই হয়ে থাকে, তবে বাত ব্যথা
বেশিরভাগই পায়ের হাঁটুতে ব্যথা দেখা দেয়। এছাড়াও ঘাড়ে ব্যথা, হাতে কনে ব্যথা
এ সকল ব্যাথার কারণে পুরো শরীর জুড়ে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই বাত
ব্যথা শরীরের যেকোনো অংশেই হতে পারে তবে সবচেয়ে বেশি পায়ের হাঁটুতে দেখা যায়।
হাটুতে বাতের ব্যথা
মানবদেহের পায়ের হাঁটু অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ অথবা অঙ্গ। পুরো শরীরের ভার
পড়ে এ হাঁটুর জয়েন এর ওপর এর কারণে একসময় বাত ব্যথার অথবা সাধারণ ব্যথা শুরু
হয়। এ ব্যথাটি মূলত শুরু হয় একটি কারণে যেটি হচ্ছে ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কারণে।
তাই অবশ্যই ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করার লক্ষ্যে ভালো মতো দেখভাল করতে হবে।
এছাড়াও বেশি বেশি শারীরিক ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন।
এই বাত ব্যথা মূলত ৩০ থেকে ৬০ বছর বয়সে শরীরে বাত ব্যথা দেখা দেয়। এছাড়াও বয়স
বাড়ার সাথে সাথে এ রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। এই বাত ব্যথার কারণে যেভাবে ব্যথা
অনুভব শুরু হয় যেমন-অতিরক্ত হাঁটাহাঁটির কারণে, সিড়ি দিয়ে উঠানামা করলে, দীর্ঘ
সময় পায়খানায় বসে থাকলে এছাড়াও নামাজ পড়ার সময় হাঁটুতে ব্যাথা পেতে পারে।
এই উপসর্গ গুলো দেখা দিলে বুঝতে হবে শরীরে বেঁধেছে বাত ব্যথা।
বাতের ব্যথা কমানোর ঔষধ
বাত ব্যথার কমানোর বিভিন্ন ধরনের ঔষধ রয়েছে। আপনি যদি বাত ব্যথা কমাতে চান তাহলে
ঔষধ ছাড়াও আপনি বাত ব্যথা কমাতে পারবেন। যেমন বাত ব্যথার কিছু ব্যায়াম রয়েছে
সেগুলো উপরে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও ভালো কোন ফার্মেসি থেকে আপনি বাত ব্যথা
কমানোর জন্য মলম নিতে পারেন। বাত ব্যথার ঔষধ এর চেয়ে মলম সবচেয়ে বেশি
কার্যকারিতা রয়েছে ঔষধ এর ফলে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই
অবশ্যই সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। এছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ সেবন করুন।
বাতের ব্যথার আয়ুর্বেদিক ওষুধ
বিশেষজ্ঞরা, বরাবর বলে থাকেন বাতের ব্যথার জন্য আয়ুর্বেদিক ঔষধ মেথি বিশেষ ভাবে
ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই বাতের ব্যথার আয়ুর্বেদিক ঔষধ মেথি সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি বাত ব্যাথার আয়ুর্বেদিক ঔষধ খেতে যান
তাহলে মেথির দানা অথবা বীজ রাতে ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে পানিসহ বীজ চিবিয়ে
খেয়ে ফেলুন। মেথির বীজ বাতব্যথা দূর করতে বেশ সহায়তা করে।
আদা চা-আদা চা শরীরের যেকোনো ব্যাথা দূর করার পাশাপাশি বাত ব্যথার
সংক্রমণও খুব সহজেই দূর করে। আদা শরীরের ব্যথা সহ প্রবাহ কমায়। এছাড়াও আদা চা
নিয়মিত পান করলে শরীরের নানা ধরনের সমস্যা দূর করতে সক্ষম হয়। তাই বাতের ব্যথা
দূর করতে আদা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বাতের ব্যাথার ট্যাবলেট
বাতের ব্যথার জন্য অনেকেই ট্যাবলেট জাতীয় ঔষধ খুজে থাকেন এবং ভালো ঔষধ না
পাওয়ার কারণে এর জন্য বাত ব্যথার চিকিৎসাও হয় না। বাত ব্যথার ট্যাবলেট যেটি নাম
হচ্ছে ডিক্লোমল ট্যাবলেট (Diclomol Tablet) এই ট্যাবলেটটির কারণে শরীরের
জয়েন্ট গুলোর খোলা ভাব এবং ব্যথাজনিত যে সকল রোগ রয়েছে দমন করতে সক্ষম হয়। তাই
আপনি বাত ব্যথা দূর করতে ডিক্লোমল ট্যাবলেট (Diclomol Tablet) সেবন করতে
পারেন এবং অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ট্যাবলেট সেবন করুন।
উপস্থাপনা-বাতের ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়
প্রিয় পাঠক, আপনি হয়তো এতক্ষণে জেনে গেছেন বাতের ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়
সম্পর্কে। আপনি যদি বাত ব্যথা অথবা আপনার ফ্যামিলির কেউ বাদ ব্যথায় আক্রান্ত
হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই তাদের সঙ্গে এই টিপসগুলো শেয়ার করুন। এবং তাদেরকে এই
বাত ব্যথা থেকে মুক্ত করুন। বাসা বাড়িতে আমাদের মা-বোনদের বেশিরভাগ বাদ ব্যথা
উপসর্গ দেখা দেয় তাই অবশ্যই তাদেরকে সতর্ক করুন এবং এই আর্টিকেলটি টিপসগুলো
জানিয়ে দিন।
উপরে দেওয়া টিপসগুলো যদি আপনি না বুঝতে পারেন তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে
প্রশ্ন করতে পারেন, আমরা অবশ্যই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আপনাকে সহযোগিতা করব।
এছাড়াও আর্টিকেলটি আপনার কেমন লাগলো অবশ্যই মতামত দিয়ে আমাদের উৎসর্গ করুন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য এবং আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে
অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url